মো. মাহফুজুর রহমান, গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরের কালীগঞ্জে সিয়াম (৩০) নামে এক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেফতারে থানা পুলিশকে সহায়তা করায় এক দফেদারকে হত্যা করে মরদেহ গুম করার হুমকি দিয়েছে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) দুপুরে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়টি অবগত করেন ভূক্তভোগী দফেদার কবির হোসেন (৫০)। এর আগে এ ঘটনায় ২১ জুন তিনি বাদী ইউপি মেম্বার ও তাঁর ছোট ভাইকে অভিযুক্ত করে কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (নং ১০০৬) করেন।
বিকেলে সাধারণ ডায়েরীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও দফেদারের করা জিডির তদন্ত কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান খান। তবে ব্যাপারটি তদন্তাধীন রয়েছে বলেও তিনি জানান।
ভূক্তভোগী দফেদার কবির হোসেন উপজেলার তুমুলিয়া ইউনিয়নের টিউরি এলাকার মৃত সামসুদ্দিনের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দফেদার হিসেবে কাজ করছেন। অপরদিকে, অভিযুক্ত মো. মাহবুব (৪৫) একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও তার ছোট ভাই মো. হাবিবুর (৩৫)। তারা ওই ইউনিয়নের বর্তুল গ্রামের মো. নূর ইসলামের ছেলে ।
ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতারে অভিযানকারী কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করিম বলেন, গত ১৯ জুন দিবাগত রাতে থানার দুই কনস্টেবল ও দফাদার কবিরকে নিয়ে ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি সিয়ামসহ আরো ২ আসামীকে গ্রেফতার করতে বর্তুল গ্রামে অভিযান চালাই। এ সময় দফেদার খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি সিয়াম ইউপি সদস্য মাহবুবের বাড়ীর সামনে অবস্থান করছে। পরে থানা পুলিশকে এই তথ্য দিলে ওখান থেকে সিয়ামকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু মেম্বারের বাড়ীর পাশ থেকে ধরিয়ে দেওয়ায় দফেদারের উপর ওই ইউপি সদস্য ও তার লোকজন উত্তেজিত হয়। এ সময় ইউপি সদস্য ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি সিয়ামকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধও করেন। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আসামী নিয়ে থানায় চলে আসি।
ভূক্তভোগী ওই দফেদার কবির হোসেন বলেন, পুলিশ আসামী গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পর ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই রাতেই আনুমানিক ১টার দিকে ইউপি সদস্য ও তাঁর ছোট ভাই তাদের বাড়ির পাশে আমাকে একা পেয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এর প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে হত্যার হুমকি দেয় এবং মরদেহ গুম করে ফেলার কথাও বলে। তাই নিজের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছি।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মাহাবুব বলেন, আসলে প্রাণ নাশের হুমকি বা গুমের অভিযোগটি সত্য না। আমার বাড়ীর পাশ থেকে আসামী গ্রেফতার করেছে বলে দফাদারকে শুধু বলেছিলাম আসামিদের আমার বাড়ির পাশ থেকে না ধরে অন্য কোন স্থান থেকেও ধরতে পারতেন। এছাড়া এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে আসামিদের পক্ষে পুলিশকে অনুরোধ করেছিলাম সিয়ামকে যেন রেখে যায়। আমি সকালে গাজীপুর কোর্টে জামিন করিয়ে থানায় নিয়ে যাবো বলেছিলাম। পরে পুলিশ আমার কথা না রেখে আসামী গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী ওই দফেদার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য থানার একজন সাব-ইন্সপেক্টরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।