নিজস্ব প্রতিবেদক:
শারীরিক প্রতিবন্ধী রাসেলের কপালে জোটেনি একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড। আর চলাফেরার জন্য নাই একটি হুইল চেয়ার। এখন কাঠের লাঠিই তার একমাত্র ভরসা। অভাব অনটনে জর্জড়িত একটি পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন রাসেল। সিংগাইর উপজেলার জামশা ইউনিয়নের কালিগঙ্গা নদীর তীরবর্তী উত্তর জামশা গ্রামের দিনমজুর মো. ওমর আলীর ছেলে।
জানা যায়, দিনমজুর মো. ওমর আলীর ঘর আলো করে ১২ বছর আগে ফুট ফুটে একটি পুত্র সন্তান জন্ম হয়। জন্মের পর থেকেই রাসেলের দুটি পা অবস। দুপায়ে ভর দিয়ে চলাফেরা করতে পারে না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাসেলের পরিবার বুঝতে পারেন যে ছেলের দুটি পা পঙ্গু । রাসেল-কে ভাল করার জন্য শুরুতে ফকির দিয়ে বহু ঝাড়ফুক করেন। কিন্তু কোন কিছুতেই তাকে ভাল করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় চিকিৎসকের মাধ্যমে কোন রকম চিকিৎসা দিলেও অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করতে পারেনি রাসেলের পরিবার। বৃদ্ধ মা অসুস্থ ছেলে ও মেয়ে নিয়ে সংসার চালতে এমনিতেই হিমশিম খাচ্ছেন ওমর আলী। ওমর আলী ছেলে সন্তান নিয়ে যে ঘরে বসবাস করেন সেটিও পাট খড়ির বেড়ার ছাপড়া ঘর। সংসারে অভাব অনটন যেন তাদরের নিত্যদিনের সঙ্গি। কোন রকম স্ত্রী সন্তান নিয়ে একবেলা খেয়ে আরেক বেলা না খেয়ে দিনাতিপাত করছে ওমর আলী।
ধার দেনা করে চিকিৎসা করিয়ে তাকে ভাল করতে পারেন নাই। বর্তমানে ওমর আলী একটি ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজ করেন। তিনি যে পারিশ্রমিক পান তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খান। তাও আবার ইটভাটা ছয় মাস কাজ থাকে আর ছয় মাস কাজ থাকেনা। তখন পরিবার ও স্ত্রী সন্তান নিয়ে চলাই কষ্ট, আবার ছেলে রাসেলও দু’চার টি স্বাভাবিক শিশুর মত নয়। তার দুটো পা চিকুন, পায়ে কোন বোধশক্তি নেই। কাঠের লাঠির উপর ভরকরে চলা ফেরা করে। রাসেলের লেখা পড়ার প্রবল ইচ্ছা শক্তি থাকার পরও তিনি পড়া শুনা করতে পারেন নাই। এই গ্রামে তিন কিলোমিটারের মধ্য কোন স্কুল ননা থাকায় তার স্কলে যাওয়া হয়নি। যে কারনে সে পড়াশুনা করতে পারিনি। প্রতিবন্ধী রাসেলের মা নাসিমা আক্তার বলেন, আমার ছেল একজন প্রকৃত শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্বেও তার কপালে জোটেনি কোন ভাতা ও একটি হুইল চেয়ার।
ইউএনও দীপন দেবনাথ বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী রাসেল যাতে ভাতা ও হুইল চেয়ার পান সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।