মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ রাজু ত্রিশাল ময়মনসিংহ:
নিয়তি কতই না নিষ্ঠুর! ছোট বোনের শ্রাদ্ধ সম্পন্ন করতে সকাল বেলা মাছ ক্রয় করতে গিয়ে পানের আড়তের পানবাহী ট্রাক থেকে পানের বোঝা মাথায় পরে মৃত্যু বরণ করলো এক পথচারী।
বলছিলাম ময়মনসিংহের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ডে দূর্ঘটনায় মৃত্যু বরণ করা গণেষ রবীদাস সাধু’র কথা।
ছোট বোনের মৃত্যুর ১১দিনের মাথায়, শ্রাদ্ধ আয়োজনের জন্য রবীদাস শহরের হাইওয়ে সংলগ্ন মাছের আড়তে মাছ কেনে বাড়ি ফিরছিল। হাইওয়ে উপর লাল মিয়ার আড়তে অসতর্কভাবে পন্য খালাস করা পানবাহী একটি ট্রাক থেক পানের ঝাইল পরে যায় ফুটপাত ধরে হেটে চলা রবীদাস(৫০)এর উপর।রাস্তায়ই লুটিয়ে পরে রবিদাসের দেহ।আশপাশে নিকটাত্মীয় কেউ না থাকায় দীর্ঘ সময় পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন।
রবীদাস পেশায় একজন মুচি।ত্রিশাল বাজারেই নিয়মিত জুতো সেলাইয়ের কাজ করছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। সংসারের একমাত্র উপার্জন করা রবীর উপর ৩সন্তান, স্ত্রী ও ছোট ভাই নির্ভরশীল ছিল।পরাশুনা চালিয়ে যাওয়া ছেলে মেয়ে ও ছোট বাচ্চাটি আজ অসহায়।
পরিবারে বইছে শোকের ছায়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পান আড়ৎদাররা সবসময়ই হাইওয়ে, এবং ফুটপাত এর উপর অসতর্কভাবেই মাল খালাস করে।প্রায় সময়ই ছোটখাটো দূর্ঘটনা ঘটে।কিন্তু এ বিষয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথাই নেই।
হাইওয়ে উপর পন্য খালাসের কোন অনুমতি আছে কিনা,এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবু বকর ছিদ্দিক বলেন- অনুমতি নেই,তবে আমরা দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থার চিন্তা করছি।
অভিযুক্ত পান আড়ৎদার লাল মিয়ার কাছে দূর্ঘটনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে,সে দায় অস্বীকার করে।পান খালাসে হাইওয়ে ও ফুটপাত দখল বিষয়ে তিনি বলেন, আমি তো একলাই পান নামাই না,সবাই নামায় আমিও নামাই।আর দূর্ঘটনার দায় আমার না,লেবার কাজ করে তারা জানে।আমি তো ঐ সময় আছিলাম না।
রবীদাস এখন মৃত লাশ। তার মৃত্যুর পেছনে দায়ী কি কেউ নয়? অসাবধানতা,অনিয়মের দায় তবে কার?রবীদাসের লাশ সুরতহাল চলছে, এদিকে প্রভাবশালী একটি চক্র কাজ করছে বিষয়টি দামচাপার।বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নাম শোনা যাচ্ছে।হয়তো তাদের ক্ষমতার চাপে পরেই চাপা পরে যাবে মুচি রবীদাস!