মানিকগঞ্জে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলমের নাম ভাঙিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় দুই সাংবাদিক। জেলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এ কিউ এম আশরাফুল হকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।
অবশ্য এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, তিনি ওই চিকিৎসককে চেনেন না এবং কোনোদিন দেখেনওনি।
জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বহির্বিভাগীয় রোগীর টিকিটে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকের নাম লিখে দেওয়া ও রোগীর ভাগিয়ে ক্লিনিকের পাঠানোর বিষয়ে বক্তব্য নিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ওই চিকিৎসক ‘বাংলাদেশের খবর’ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি আফ্রিদি আহাম্মেদ ও ‘বাংলাদেশের আলো’ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মো. সাইফুল ইসলামকে এ হুমকি দেন।
হুমকি দেওয়ার ভিডিওতে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে ডা. এ কিউ এম আশরাফুল হককে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি চিনেন আমি কে? আমার কথা আপনারা প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলমকে জিজ্ঞেস করবেন আমি কে! আর আপনারা হাসপাতালে এসেছেন কার অনুমতি নিয়ে, আপনি জানেন সাংবাদিকদের হাসপাতালে ঢুকতে লিখিত অনুমতি লাগে? আপনারা কীসের সাংবাদিক আমাকে পরিচয় দেন। আপনারা সাংবাদিক না প্রতিনিধি? তোমরা কার পিছনে লাগছো বুঝতে পারো নাই?’
এভাবে তিনি বলতে বলতে একপর্যায়ে রেগে হাসপাতাল থেকে সাংবাদিকদের বের হয়ে যাওয়ার হুমকি দেন তিনি।
এ বিষয়ে সাংবাদিক আফ্রিদি আহাম্মেদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে একাধিক রোগীর অভিযোগে ডা. এ কিউ এম আশরাফুল হকের বক্তব্য চাইতে তিনি রেগে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলমের নাম ভাঙিয়ে আমাদের খারাপ ব্যবহার ও বিভিন্ন হুমকি দেন।’
অন্যদিকে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকার শেখ হাসিনার আমলে আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্য চাইতে গেলে হুমকি দিতেন, বিভিন্ন ভয় দেখাতেন, পেশাগত কাজে বাধা দিতেন। ভেবেছিলাম স্বাধীনতার পর পেশাগত কাজে বাধা আসবে না! এখন দেখি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের নাম ভাঙিয়েও আমাদের হুমকি দিচ্ছেন।’
হুমকি দেওয়ার বিষয়ে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এ কিউ এম আশরাফুল হক বলেন, ‘আমার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখেন আমি কোনো অনিয়ম করি কি না? এত ছোট বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবকে জানানো কি ঠিক হবে? আমি ওদের বলেছি, আমার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের কাছ থেকে খোঁজ নিয়েন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সব থেকে বড় পরিচয় হচ্ছে আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। আমাদের কে কি আত্মীয় সেটা কর্ম ক্ষেত্রে দেখানো উচিত না। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’