সিংগাইর মানিকগঞ্জ:
কিডনি ও হার্টের রোগে আক্রান্ত মোবারক-শিলা দম্পিতি। এখন আর আগের মত কাজ-কর্ম করতে পারেনা। স্বামী-স্ত্রী ২ সদস্যের সংসার তাদের। নিজেদের কোনো জায়গা জমি নেই। আপাতত মোবাইল টাওয়ার ঘরে অস্থায়ী মাথা গোঁজার জন্য আশ্রয় নিয়েছে। অর্থ কষ্টে দূর্বিষহ জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন মোবারক-শিলা দম্পিতি।
জানা যায়, মানিকগঞ্জের সিংগাইর পৌরসভার বকচর গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মোবারক। একসময় মাথা গোজার ঠাই ঘর বাড়ি সবই ছিল তার। তারই চাচাত ভাই ছেকা মিয়া তার পিতার রেখে যাওয়া ভিটে বাড়ীর জায়গাটুকু ষড়যন্ত্র করে লিখে নেন। এরপর থেকে আজ এখানে কাল ওখানে ভাসা পানার মত ভাসতে থাকেন। মোবারক চট্টগ্রাম ষ্টীল মিলে চাকরি করতেন। স্ত্রী সন্তান নিয়ে ভালই চলছিল তার জীবন সংসার। কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে স্ত্রী মারা যান। তার এক ছেলে, এখন বিয়ে-সাদি করে চট্টগ্রাম শহরে থাকে। মোবারক দীর্ঘদিন একাকী জীবন যাপন করার পর শিলা নামে এক মেয়ে-কে বিয়ে করেন।
মোবারক বলেন, দিনে ইটের ভাটায় কাজ করি আর রাতে টাওয়ার পাহারার দেই। যা ইনকাম করেন তা দিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতাম৷ কিন্তু এখন বয়স হয়েছে সত্তরে উপরে কিডনি ও হার্টের রোগের ঔষধপত্র কিনতেই হিমশিম খাচ্ছি। ভাড়া বাসায় আবার থাকবো কিভাবে। বাধ্য হয়ে টাওয়ারেই বসবাস করছি৷ এক যুগেই বেশি সময় ধরে এখানে আছি।
মোবাইকের স্ত্রী শিলা বলেন, জীবনে সুখ হইলো না, প্রথমে বিবাহ হয়েছিল, সে স্বামী মদ গাঁজা, নেশা করতো, অত্যাচার করতো ভাত কাপড় দিত না, যে কারণ সংসার করা হয়নি৷ পরে এর সাথে বিবাহ হয়। তারও বাড়ী ঘর কিছুই নেই, দিন আনে দিন খায় এখন বয়স হয়েছে। আগের মত আর কাজ কর্ম করতে পারেনা। যা আয় হয় তা দিয়ে বাসা ভাড়া নিতে গেলে একবেলা খেয়ে আরেক বেলা নাখেয়ে থাকতে হবে। এছাড়া হাট ও কিডনি রোগী। প্রতিদিন অনেকগুলো ঔষধ খেত হয়। উপায়ান্ত না পেয়ে এইখানে বস বাস করছি৷ জমি সহ একটা ঘর পাইলে আমাদের আর আশ্রয়হীন হতে হতো না, একটা ঠাই হতো। শেখ হাসিনা কতজনকে ঘর দিলো মেম্বার চেয়ারম্যান খবর নিলনা।
উপজেলায় বিভিন্ন গৃহহীন ও ভূমিহীনদের ঘর উপহার দেওয়া হলেও মোবারক-শিলা দম্পতির অসহায় অবস্থার বিষয়ে অবগত নন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দিপন দেবনাথ। তিনি বলেন, ‘এখন যেহেতু তাদের অবস্থা জানতে পারলাম, তাদেরকে আসতে বলেবেন, তাদের জন্যও ঘরের ব্যবস্থা করা হবে।’