নিজস্ব প্রতিবেদক:
কেউবা ফাঁকা রাস্তা দিয়ে বন্ধুদের সাথে হাঁটছেন, কেউ ছুটছেন এলাকার ফাস্ট ফুডের দোকানে, আবার কেউ পরিবার নিয়ে ঘোরাঘুরি করছেন। অনেক তরুণদের দেখা যায়, বাইক নিয়ে বের হয়েছেন বন্ধুদের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে।
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা। রাজধানী ঢাকার অদূরে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও সরকারি-বেসরকারিভাবে পর্যটন কিংবা বিনোদনকেন্দ্র গড়ে না ওঠায় বিনোদন থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে এ উপজেলার মানুষ।
বিনোদনকেন্দ্র না থাকায় বর্তমানে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য বিনোদন প্রেমীরা ভিড় জমায় উপজেলার বিভিনন্ন নদী উপর অবস্থিত ব্রিজ গুলোতে। এমন পরিস্থিতিতে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে উপজেলার হাজার হাজার বিনোদন প্রেমী মানুষ জড়ো হয়ে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ঈদ উৎসবে মেতে উঠে।
ভাষা শহিদ রফিক সেতু এবং জামশা, নিলাম্বরপট্টি ও সিরাজপুর সেতুগুলোতে ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিন হাজার হাজার বিনোদন প্রেমী মানুষ একে অপরের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করার দৃশ্য ছিলো চোখে পড়ার মতো। সিংগাইর উপজেলায় কোন বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় ব্রীজগলোই বিনোদন প্রেমী মানুষের কাছে সময়ের পালাক্রমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বিভিন্ন উৎসবে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরাঘুরি করতে ভিড় জমায় দর্শনার্থী ও বিনোদনপ্রেমী পরিবারগুলো। বিনোদন প্রেমী মানুষ জীবনের খানিকটা ইতি টেনে বিকেল থেকে সন্ধা পর্যন্ত বন্ধু-বান্ধব, পরিবার পরিজন, আত্মীয়স্বজন, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, কবি, লেখক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ডাক্তার ও নানান পেশাজীবী মানুষ ছুটে আসে ব্রীজগুলোতে।
সুন্দর মুহুর্তগুলো ক্যামেরা বন্ধী করতে কেউ বন্ধুদের নিয়ে, কেউ সহপাঠীদের নিয়ে, কেউবা বাবা-মা, আত্নীয়স্বজনদের সঙ্গে সেলফি তোলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতু ঘিরে বসেছে বিভিন্ন দোকান পাঠ, কেনা বেঁচা চলছে তুমুল। শিশুদের দৃশ্য ছিলো চোখে পড়ার মতো। এসব মিলে মানুষের আনন্দের ছিলো না শেষ।
ঘুরতে আসা চান্দহরের এনামুল হাসান নামে একজন জানান, এখানে এসে মুক্ত পরিবেশে হাজারো মানুষের মাঝে আনন্দ ভাগ করতে অনেক ভাল লাগছে। বন্ধুদের সাথে ঘুরতে আসলাম। সময় সুযোগ পেলে ঈদ ছাড়াও মাঝে মাঝে এখানে ঘুরতে আসি। তবে এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিলো চোখে পড়ার মতো।
সিংগাইরের আব্দুল গফুর জানান, আমাদের এলাকায় কোন বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় বিকল্প হিসেবে এই স্থান গুলোকে বেছে নিতে হয়েছে। তাছাড়া এখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও কোন অংশে কম নয়। বিনোদন প্রেমী মানুষের জন্য সিংগাইরের ভালো মানের একটি বিনোদন কেন্দ্র থাকলে অনেক ভাল হতো।
মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের সিংগাইরে বিনোদনকেন্দ্র না থাকা আসলেই দুঃখজনক। শিশুদের মনন বিকাশে এখানে একটি পরিকল্পিত বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলা জরুরি।
বিনোদন প্রেমী জানান, উপজেলায় নেই কোন বিনোদন কেন্দ্র ও পার্ক। এমন পরিস্থিতিতে ব্রীজ গুলোতে নিরাপত্তা ঝুঁকি উপেক্ষা করে হাজার হাজার বিনোদন প্রেমী মানুষ ঝড়ো হয়ে। এতে সড়ক দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে। আমাদের দাবি সিংগাইর উপজেলায় কয়েকটি বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা হোক।