মো. ফারুক হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
উত্তরবঙ্গের শষ্য ভান্ডার খাত হিসেবে পরিচিত নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটার উৎসব। বাতাসে দোল খাওয়া গুচ্ছ গুচ্ছ পাকা সোনালী ধানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কৃষকের স্বপ্ন। দীর্ঘ চার মাস নিবিড় পরিচর্যার পর ধান কেটে ফসল এখন ঘরে তোলার পালা।
বদলগাছী উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠের প্রায় ৮০ ভাগ ধান পেকে গেছে। তাই উপজেলার বিভিন্ন মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে বোরো মৌসুমের ধান কাটা-মাড়াই। প্রখর রোদ উপেক্ষা করেই ধান কাটা-মাড়াইয়ে বেড়েছে কৃষক- কৃষাণীর ব্যস্ততা।
এবার বোরো মৌসুমের শুরু থেকেই বৈরী আবহাওয়ার ধকল, তার ওপর দফায় দফায় কৃষি উপকরণের বাড়তি দাম গুনতে হয়েছে কৃষকদের। তাদের অভিযোগ, গত মৌসুমের চেয়ে এবার চাষাবাদে বিঘাপ্রতি আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে। কৃষি উপকরণের বাড়তি দাম আর বৈরী আবহাওয়ার ধকল থাকলেও শেষ মুহূর্তে কাঙ্ক্ষিত ফলন হওয়ায় আলোর মুখ দেখছেন তারা। তবে ফসল (ধান) কেটে তোলা ধান হাটে তোলার পর কাঙ্ক্ষিত দর পাবেন কি না, তা নিয়ে কৃষকদের মনে বেশ সংশয় রয়েছে।
এ উপজেলায় ১১হাজার ৭শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ পূরণ হওয়ায় এবার এ উপজেলায় ধান উৎপাদন হবে প্রায় ৭০ হাজার মেঃ টন আর চাল উৎপাদন হবে প্রায় ৪৫ হাজার মেঃটন। ইতিমধ্যে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রজাতির ৮০ ভাগ পাকা বোরো ধানের নমুনা শষ্য কর্তন করে ফলন নির্নয় করা হয়েছে। ব্রি-২৮ জাত শুকনো ২২ মন, গোল্ডেন আতব-২০ মন, ব্রি-৮১ ও ৮৮ জাত ২১ মন, ব্রি-৯০ জাত ২০ মন হারে ফলন আসছে।
উপজেলার চাংলা গ্রামের কৃষক মোস্তফা মন্ডল বলেন, ৫বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ কেরেছি এখন কাটা-মাড়াই এর পালা। ধান কাটা শুরু করেছি গত মৌসুমের তুলনায় এবার ফলন ও ভালো হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী ১০/১৫ দিনের মধ্যে কৃষকেরা শতভাগ ধান ঘরে তোলার আশা করছে। এবার ধান চাষে অনেক বেশি খরচ, তাই সঠিক দাম না পেলে লাভ হবে না। এদিকে বদলগাছীর হাটগুলোতে নতুন ধান ওঠা শুরু হয়েছে। কাটারি ধান বিক্রি হচ্ছে ১২৬০ টাকা জিরা ধান ১১৮০ টাকা মণ দরে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষি বিদ সাবাব ফারহান বলেন, সরকারি প্রণোদনা ধানের বিজ, সার, কৃষি উপকরণ সহ কৃষকদের আধুনিক কলাকৌশল ও সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন হওয়ার আশা কৃষি বিভাগের।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো, তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী ১০/১৫ দিনের মধ্যে এলাকার শতভাগ ধান ঘরে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে চাষিদের ৮৫ ভাগ ধান পেকে গেলে তা দ্রুত কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।