নরসিংদী:
নরসিংদীর শিবপুরে স্বামীর দাবিকৃত যৌতুকের আরও দুই লাখ টাকা দিতে না পেরে শ্বশুরবাড়িতে গৃহবধূ অন্তঃসত্ত্বা লাকি আক্তার (২২) নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রবিবার (১৮ জুন) দিবাগত রাতে শ্বশুর বাড়িতে ওই গৃহবধূর স্বামী হৃদয় মিয়া, শ্বশুর রশিদ মিয়া, দেবর নয়ন, কাশেম ও আল-আমিনের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিত গৃহবধূ লাকি আক্তার। পরে অচেতন অবস্থায় তার মা নারগিস বেগম ১০০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
গৃহবধূ লাকি আক্তারের মুখমন্ডল, মাথা ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক।
সে শিবপুর উপজেলার দক্ষিণ সাধারচর গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়ার স্ত্রী এবং একই গ্রামের মৃত খোকন শিকদার এর মেয়ে।
গৃহবধূ লাকি আক্তার বলেন, হৃদয় ও আমি একই গ্রামে বসবাস করি। সেই সুবাদে হৃদয়ের সাথে আমার ছোটকাল থেকেই পরিচয় এবং বেড়ে ওঠা। আমি গত দুইবছর ধরে প্রবাসে (সৌদি আরব) চাকরি করি। প্রবাস থেকে চাকরি ছেড়ে গত আট মাস হয় দেশে ফিরে আসি। পরে আমার ও হৃদয়ের পরিবারকে না জানিয়ে আমরা গত সাত মাস আগে নরসিংদীর একটি কাজী অফিসে গিয়ে রাকিব গাজী, আজিজুল মিয়া ও হোসেন গাজীর উপস্থিতিতে বিবাহ করি। বিবাহের পর হৃদয়কে বিদেশ পাঠানোর জন্য আমার সঞ্চয়কৃত টাকা থেকে নগদ দুই লাখ টাকা এবং ঘর তৈরি করার জন্য ইট, বালু কিনে আনি। হৃদয় ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন আরও ৩ লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্য তারা আমাকে প্রতিদিনই নির্যাতন করত। রবিবার দিবাগত রাত ৩টায় হৃদয় মাতাল হয়ে ঘরে ঢুকে টাকার কথা বলে গালমন্দ করতে থাকে। আমি এর প্রতিবাদ করলে সে এবং শ্বশুরসহ দেবরা আমাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে গলায় ওড়না পেচিয়ে মাথা, মুখমণ্ডলসহ সারা শরিরে আঘাত করে। বর্তমানে আমি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
গৃহবধূ লাকির মা নারগিস বেগম বলেন, আমাদের অমতে তাদের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকে কারণে অকারণে তারা আমার মেয়েকে মারধর করে। সে তার কাছে প্রায়ই যৌতুকের টাকা চায়। তিনি আরও বলেন, তার বিদেশ থেকে আনা সব অর্থ শ্বশুর বাড়িতে দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তাদের চাহিদা মত আরও ৩ লাখ টাকা চাই। টাকা না পেয়ে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে নির্যাতন করে মেরে ফেলতে চেয়ে ছিলেন। তার মাথা, মুখমণ্ডল, হাত পা ও দেহের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। মার খেয়ে সে অচেতন হয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় জেলা হাসপাতালে ভর্তি করাই।
শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার জানান, গৃহবধূ নির্যাতনের কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।