ajkertarunkantho
ঢাকামঙ্গলবার , ৪ জুলাই ২০২৩
  1. অপরাধ-দুর্নীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস ঐতিহ্য
  5. ইসলাম ও জীবন
  6. কৃষি সমাচার
  7. খেলাধুলা
  8. জনদুর্ভোগ
  9. জাতীয়
  10. ধর্ম ও সংস্কৃতি
  11. প্রবাস সমাচার
  12. বাণিজ্য
  13. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  14. বিনোদন
  15. বিশেষ প্রতিবেদন

বিবাহিত ইউপি সদস্যের হাত ধরে নারী ইউপি সদস্য উধাও

নিউজ রুম
জুলাই ৪, ২০২৩ ১২:০৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি:

স্বামী ও দুই সন্তানকে ফেলে রেখে বিবাহিত ইউপি সদস্য প্রেমিকের হাত ধরে উধাও নারী ইউপি সদস্য। তিনদিন ধরে তাদের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের ব্যক্তিগত মুঠেফোন নম্বরও বন্ধ রয়েছে। এ ঘটনা মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার। তারা দুজনেই উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইশাখাবাদ গ্রামের মরহুম খোরশেদ মোল্লার ছেলে ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. সাদ্দাম মোল্লার (৩০) সাথে একই ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নাজমা আক্তারের (৩০) দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। বিষয়টি নিয়ে নাজমা আক্তারের সাথে তার স্বামী মো. ইছাক মিয়ার মনোমালিন্য চলছিলো। গত শনিবার (১ জুলাই) বিষয়টি নিয়ে নাজমা আক্তারের সাথে তার স্বামীর কথাকাটাকাটি হয়। এর প্রেক্ষিতে নাজমা বেগম স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। পরদিন রোববার (২ জুলাই) থানা থেকে তাদের ডেকে পাঠায়। রবিবার সকালে মো. ইছাক মিয়া তার পরিবারের লোকজনসহ তার শ্বশুর বাড়ির লোকদের সাথে থানায় যান। তবে, তাদের সাথে নাজমা বেগম থানায় যাননি। তারা নাজমা বেগমকে ডাকলে তিনি বলেন, আমি থানা চিনি। আমাকে থানা চেনাতে হবে না। পরবর্তীতে মো. ইছাক মিয়াসহ সবাই থানা থেকে বাড়ি ফিরে এসে দেখেম নাজমা আক্তার বাড়িতে নেই। পরিবারের লোক সবাই ভেবেছিলেন তিনি হয়তো থানায় গেছেন, চলে আসবেন। কিন্তু সন্ধ্যা পার হলেও তিনি ফিরে না আসায় তার মুঠোফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর থেকে ৩নং ইউপি সদস্য মো. সাদ্দাম হোসেনও এলাকায় নেই। তার মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ। পরে এ ঘটনায় নাজমার স্বামী হরিরামপুর থানায় নাজমার পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মো. সাদ্দাম মোল্লা এ পর্যন্ত দুটি বিয়ে করেছেন। দুজনের সাথেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তাদের বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীকে সন্তান সহ তিনি তালাক দিয়েছেন। সাদ্দামের বর্তমান (দ্বিতীয়) স্ত্রী বিদেশে থাকেন।

নাজমার স্বামী মো. ইছাক মিয়া বলেন, সাদ্দামের সাথে আমার স্ত্রীকে চলাফেরা করতে নিষেধ করলেও সে তা মানেনি। আমাদের ১৪ বছরের সংসার। আমাদের দুইটি ছেলে সন্তান রয়েছে। একজন ষষ্ঠ শ্রেণিতে, আরেকজন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। নাজমা বেগম আমার বাড়ি থেকে এক লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা এবং দেড় ভরি স্বর্ণের গহনা নিয়ে গেছে। তার কোন খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছে না। আমি এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।

ইছাক মিয়ার বড় ভাই মো. ইসমাইল বলেন, নাজমা বেগম সাদ্দাম হোসেনের সাথে পালিয়েছেন কিনা আমরা জানি না। তবে, ঘটনার পর থেকে সাদ্দামও নিখোঁজ বলে শুনেছি। সাদ্দামের মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ। তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার সাথেই সে পালিয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে সাদ্দাম মোল্লা ও নাজমা আক্তারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। গতকাল সোমবার সাদ্দামের বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। সাদ্দামের মা জানান, সাদ্দাম বাড়িতে নেই।

বিষয়টি লজ্জাজনক জানিয়ে রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বলেন, “এ ধরনের জনপ্রতিনিধিদের কাছে জনগণ ভালো কিছু পাবে না। আমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। আমার ইউনিয়নের মেম্বার রা যদি এধরনের কাজ করে, সেটা তো আমার মাথা ব্যথা হওয়া উচিৎ। যেহেতু আমি দুইদিন তাদের খোজাখুজি করলাম পেলাম না। সেক্ষেত্রে আমাকে ইউএনও মহোদয় কে জানানোর কথা, গতকাল জানিয়েছি। আমি আজকে তার সাথে দেখা করবো, পরামর্শ করবো। এক-দুজনকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া যায় কিনা। কারণ এভাবে কলঙ্ক নিয়ে তো আমি ইউনিয়ন পরিষদ চালাতে পারবোনা, আমার কোন মেম্বাররাও করবেনা এই কলঙ্ক নিয়ে।”

এব্যাপারে হরিরামপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার আদিত্য জানান, একটি অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি নিয়ে আমরা অনুসন্ধান করছি।

হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান জানান, বিষয়টি অবগত আছি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজ অফিসিয়াল রিপোর্ট দিলে জেলা প্রশাসক স্যারকে চিঠি দিয়ে জানাবো। এবিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে, আইন অনুযায়ী দুই ইউপি সদস্য’কে শোকজ করা হবে, শোকজের শুদ্ধ জবাব না দিলে পরবর্তীতে তাদের বহিষ্কার করা হতে পারে বলেও জানান তিনি।