মানিকগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবনে পুতে রাখা নারীর হত্যারহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। রোকসানা (৪৫) নামের ওই নারীকে পারিবারিক কলহের জেরে হত্যা করেন তার স্বামী মো. বাবুল (৩৮)। পরে লাশ গুম করতে মেঝেতে পুতে রেখে পালিয়ে যান।
বাবুলকে গ্রেপ্তারের পরে আজ শুক্রবার দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।
রোকসানা জেলার সিংগাইর উপজেলার বায়রা নয়াবাড়ী এলাকার মৃত ছইজুদ্দীনের মেয়ে। তিনি বাবুলের দ্বিতীয় স্ত্রী।
পুলিশ সুপার জানান, পারিবারিক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামীর হাতে খুনের শিকার হন রোকসানা। নিজ বাড়িতে তাকে খুন করে পাশের রুমের মেঝেতে লাশ পুতে রেখে পালিয়ে যান বাবুল। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার রাতে বাবুলকে খুলনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল রোকসানাকে হত্যা কথা স্বীকার করেছেন।
সদর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার দরিকান্দি এলাকার শেখ কাশেম আলীর ছেলে বাবুল তিন বছর আগে রোকসানাকে গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের পরেই সৌদি আরব যান রোকসানা। বিদেশ থেকে নিয়মিত দেশে স্বামীকে টাকা পাঠাতেন। সেই টাকা দিয়ে শানবান্দা এলাকায় জমি কিনে একতলা বাড়ি নির্মাণ করেন বাবুল।
পুলিশ জানায়, গত ৬ অক্টোবর ছুটিতে দেশে আসেন রোকসানা। সাভারের একটি ভাড়া বাসায় স্বামী বাবুলকে নিয়ে থাকেন। ১৩ অক্টোবর শানবান্দা গ্রামের ওই নির্মাণাধীন বাড়িতে আসেন এই দম্পতি। রাতে পারিবারিক বিষয় ও প্রথম স্ত্রীকে তালাক নিয়ে রোকসানার সঙ্গে বাবুলের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর রোকসানা ঘুমিয়ে যান। ভোররাতে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের রুমের মেঝেতে বালুর মধ্যে লাশ পুতে রেখে পালিয়ে যান বাবুল।
১৭ অক্টোবর ওই বাড়ি থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ এলে আশপাশের লোকজন নির্মাণাধীন ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন। তারা মেঝের মাটি-বালু সরালে নিহত নারীর হাত বেড়িয়ে আসে। বিষয়টি মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশকে জানালে অজ্ঞাত পরিচয় ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের ভাই মো. ফজল খবর পেয়ে জেলা হাসপাতালে রোকসানার লাশ শনাক্ত করেন।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রউফ জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন।
পুলিশের হেফাজতে থাকা বাবুল জানান, রোকসানার সঙ্গে পরিচয়ের পর তাকে বিয়ে করেন। দুই বছর আগে রোকসানা সৌদি যান। সেখান থেকে বাড়ি করার জন্য সাত-আট লাখ টাকা পাঠান। ঘটনার (১৩ অক্টোবর) রাতে তার মা-বাবা ও স্ত্রী-সন্তানদের নামে গালি দেওয়ায় তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যা করেন।