মানিকগঞ্জের দৌলতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সোর পরিসংখ্যানবিদ লেবাসধারী বরপুত্র আসাদ মিয়ার অনিয়ম, ঘুষ-দুর্নীতির থাবায় ভেঙে পড়েছে হাপাতালের স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থার পরিবেশ।
মুখোশধারী দুর্নীতিবাজ আসাদ মিয়ার ক্ষমতার দাপটের জাতাকলে পড়ে হয়রানির শিকার হচ্ছে হাসপাতালের কর্মরত নার্স ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা। এছাড়া এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সোর ফেলেরাখা বিভিন্ন মূল্যবান পুরাতন সরঞ্জাম সামগ্রী আসাদের জাদুতে হয়ে গেছে উধাও। যেন মগের মুল্লুক, দেখার কেউ নেই!
অভিযোগ রয়েছে, দৌলতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সোর প্রধান কর্মকর্তার সাথে বিশেষ মধুর সখ্যতা গড়ে তোলার মাধ্যমে সে হাসপাতালের নার্স থেকে শুরু করে কর্মচারীদের কাছ থেকে কমম্পিউটারে কর্মচারিদের তথ্য আপডেট, বাসা বরাদ্দ, বিদ্যুৎ বিল সহ বিভিন্ন অজুহাতে-উছিলায় ভয়ভিতি দেখিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ঘুষ-বাণিজ্যর অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন নীরবে। তার দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে হাসপাতালের কর্মরত কর্মচারীগন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সোর তিন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী জানান, হাসপাতালের কর্তৃপক্ষোর সাথে চতুর আসাদের গোপন সম্পর্ক ও নিজ উপজেলায় চাকরির কর্মস্থল হওয়ায় তার দাপটে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। কিছু বললেই বদলির হুুমকি দেওয়া হয়। প্রতি বছরে সে বিভিন্ন অজুহাতে আমাদের বেতন থেকে টাকা কেটে নেয়। এছাড়া কোন প্রয়োজনের কাজে গেলেই ঘুষ না দিলে হয় না কোন কাজ। সে হাসপাতালের উন্নয়নমুলক সব ঠিকাদারি কাজের সাব-কন্ট্রাকটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। বর্তমানে আসাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে হাসপাতাল। ফলে ভেঙে পড়েছে হাসপাতালের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কার্যক্রম। তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করলেও অজ্ঞাত কারণে কোন ব্যবস্থা নেননা কর্তৃপক্ষ। এ যেন হাসপাতাল গিলে খাওয়ার উপক্রম। ভুক্তভোগী কর্মচারীরা উর্ধ্বতন প্রশাসনের কাছে আসাদ মিয়ার সকল অনিয়ন-দুর্নীতির তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।
বিভিন্ন গোপন সূত্রে জানা গেছে, আসাদ মিয়ার থাবা থেকে রক্ষা পাইনি হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে ফেলেরাখা মূল্যবান পুরাতন সব লোহা-ট্রিলের সরঞ্জাম, সিট, জানালার গ্রিল-কাঠ, সাইনবোর্ড, ইট, কম্পিউটার, ব্যাটারি, অক্সিজেনের বোতল সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম সামগ্রী (টেন্ডার বিহীন) পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ না করেই বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা। অপরদিকে হাসপাতালে সম্প্রতি কিছু লোকদের আউটসোরর্সিং বিভিন্ন পদে নিয়োগ (চাকরি) দিয়ে মোটা অংকের টাকার ফায়দা লুটেছেন তিনি। এছারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সোর মেডিকেল অফিসারদের থাকার বাসভবনে নীতিমালা লংঘন করে থাকতে দিয়েছেন নার্স ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের। অভিযোগ রয়েছে তাদের কাছ থেকে নেওয়া বাসা ভাড়ার টাকা জমা হয়না সরকারি রাজস্ব তহবিলে। টাকা জমা হয় আসাদের পকেটে। আসাদ মিয়ার সব দুর্নীতি ও অপকর্মের থলের বিড়াল বের করতে এলাকাবাসি দুর্নীতিবাজ পরিসংখ্যানবিদ আসাদ মিয়ার সঠিক তদন্ত পূর্ব দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন।
এ বিষয়ে পরিসংখ্যানবিদ আসাদ মিয়ার সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. শাহ আলম সিদ্দিকী বলেন, সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে কেউ পার পাবে না। ইতিমধ্য পরিসংখ্যানবিদ আসাদ মিয়ার বিরুদ্ধে কিছু অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পড়েছে সেগুলো তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।