মো. ফারুক হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউপির রসুলপুর আদিবাসী মহল্লায় অগ্নিসংযোগ। আনুমানিক আধাঘন্টার ব্যবধানে ১৯টি বাড়িঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সর্বস্ব হারিয়ে ১৯টি পরিবারের সদস্যরা এখন বসবাস করছে খোলা আকাশের নিচে। অগ্নিসংযোগের সময় অজিত পাহান ঘুমিয়ে আছে ঘরে এমন সময় আগুনের তাপ লেগে অজিতের আড়াই মাসের অবুজ শিশু সন্তান কেঁদে উঠে। সন্তানের কান্না শুনে ঘুম ভাঙ্গে অজিতের, দেখতে পায় ঘরে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। কোন রকমে সন্তানকে নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে আসে অজিত। নিমিশেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে মহল্লায়। ছাই হয়ে যায় ১৯ পরিবারের ভবিষ্যৎ।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টার পর বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। তথ্য সংগ্রহকালে অজিত জানায় সে ঘুমে ছিল, তার অবুজ শিশু পুত্র কেন্দে না উঠলে দু’জনেই পুড়ে মারা যেত। আগুনে বাড়ি-ঘর, হাড়ি-পাতিল, ধান-চাল, টাকা-পয়সা, লেপ-কাঁথা সব হারিয়ে কান্না করছিল সন্ধ্যা রাণী। জানতে চাইলে সন্ধ্যা রাণী জানায়, ঘর করার জন্য এক লাখ টাকা জমিয়ে ছিল। টাকা গেল, খাবার ৩মন চাল পুড়ে গেল। কাঁদছিল রুবি রাণী তার গেছে নগদ দেড় লাখ টাকা।
আদিবাসীরা জানায়, নারী পুরুষ সবাই মাঠে কৃষি কাজ করে। আগুন লাগার সময় কোন বাড়িতে লোকজন ছিল না। সবাই মাঠে কাজ করছিল। সর্বনাশা আগুনে ৩টি গরু ২টি ছাগল, বাড়ি বাড়ি টেলিভিশন, শ্যালো মেশিন সবই পুড়ে ছাই, সবাই এখন বেঁচে আছে জীবন্ত লাশ হয়ে।
খবর পেয়ে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা, আসে থানা পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সহকারী কশিনার (ভূমি) আতিয়া খাতুন, উপজেলা প্রকল্প ব্যাস্তবায়ন কর্মকর্তা ময়নুল ইসলামসহ স্থানীয় ইউপি চেয়াম্যান রেজাউল করিম পল্টন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগত ৫ হাজার করে টাকা ও ২টি করে কম্বল প্রদান করেন। চেয়ারম্যান পল্টন দেন প্রত্যেককে ১টি করে লুঙ্গি ও একটি করে শাড়ি। পরিশেষে রাতে খাবারের ব্যবস্থা করেন মেম্বার নাহিদ।