০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মূল্যস্ফীতিতে ১৬ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ

তরুণকণ্ঠ ডেস্ক

মূল্যস্ফীতিতে

দেশে মূল্যস্ফীতিতে ১৬ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। জুলাই খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়ছে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি প্রথমবারের মতো দুই অঙ্ক টপকে এখন ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যেখানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। এটি গত ১৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ঠেকেছে।

সোমবার (১২ আগস্ট) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) নিয়মিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

বাংলাদেশের মানুষের ক্রয় সীমার বাইরে চলে গেছে সব ধরনের পণ্য। বিশেষ করে খাদ্যপণ্য কিনে খাওয়াই মানুষের ক্রয় সীমার বাইরে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় সংকটগুলোর একটি।

আওয়ামী সরকারের আমলে দ্রব্যমূল্যে নাভিশ্বাস উঠেছিলো। বিবিএসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো তারা সঠিক তথ্য গোপন করে টেবিল ওয়ার্কের তথ্য দিচ্ছিলো। বিশেষ করে গত জুনে সারাদেশে বন্যা হওয়ায় দেশের সব ধরনের পণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়, কিন্তু বিবিএস উল্টো হিসেব দিয়ে জানিয়েছিলো, জুনে মূল্যস্ফীতি মাত্র ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।

এবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ প্রথম মূল্যস্ফীতির তথ্য দিয়েছে বিবিএস। এতে বলা হচ্ছে, দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১ শতাংশ, খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশের মধ্যে রয়েছে।

এর আগে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে তত্ত্ববধায়ক সরকারের শাসনামলে ২০০৫-০৬ কে ভিত্তিবছর ধরে দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ঠেকেছিলো ১২ দশমিক ৩ শতাংশ, আর খাদ্য মূল্যস্ফীতি ঠেকেছিলো ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশে।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে পর এ প্রথম বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি এত উচ্চ পর্যায়ে ঠেকেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি ঠেকানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য বিদায়ী গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের নেওয়া কোনো দাওয়াইতেই কাজ হচ্ছে না। এমন সময় দেশের সুদহার বাড়ানো হয়েছে, যখন সিন্ডিকেট আরও বেশি সক্রিয় হয়েছে। পদত্যাগী গভর্নর সিন্ডিকেটের হয়েই কাজ করতেন। ফলে দেশের খেলাপি ঋণ বেড়ে গিয়েছিলো। ব্যাংক থেকে বেশিরভাগ নগদ অর্থ ব্যবসায়ীদের পকেটে চলে যাওয়ার পরই সুদহার বাড়িয়েছিলেন তিনি।

বিবিএসের তথ্য বলছে, জুলাই মাসে শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষের কষ্ট হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এ মাসে গ্রামের মূল্যস্ফীতি ছিলো ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ, যেখানে শহর এলাকায় গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ২৭ শতাংশে। তবে গ্রাম এলাকায় গড় মূল্যস্ফীতি বেশি থাকলেও খাদ্য মূল্যস্ফীতি শহর এলাকায় ছিলো সবচেয়ে বেশি। গ্রাম এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিলো ১৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ, যেখানে শহর এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিলো ১৪ দশমিক ২২ শতাংশ।

Please Share This Post in Your Social Media

প্রকাশকাল : ০২:৩১:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ অগাস্ট ২০২৪
১৮৮ Time View

মূল্যস্ফীতিতে ১৬ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ

প্রকাশকাল : ০২:৩১:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ অগাস্ট ২০২৪

দেশে মূল্যস্ফীতিতে ১৬ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। জুলাই খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়ছে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি প্রথমবারের মতো দুই অঙ্ক টপকে এখন ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যেখানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। এটি গত ১৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ঠেকেছে।

সোমবার (১২ আগস্ট) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) নিয়মিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

বাংলাদেশের মানুষের ক্রয় সীমার বাইরে চলে গেছে সব ধরনের পণ্য। বিশেষ করে খাদ্যপণ্য কিনে খাওয়াই মানুষের ক্রয় সীমার বাইরে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় সংকটগুলোর একটি।

আওয়ামী সরকারের আমলে দ্রব্যমূল্যে নাভিশ্বাস উঠেছিলো। বিবিএসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো তারা সঠিক তথ্য গোপন করে টেবিল ওয়ার্কের তথ্য দিচ্ছিলো। বিশেষ করে গত জুনে সারাদেশে বন্যা হওয়ায় দেশের সব ধরনের পণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়, কিন্তু বিবিএস উল্টো হিসেব দিয়ে জানিয়েছিলো, জুনে মূল্যস্ফীতি মাত্র ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।

এবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ প্রথম মূল্যস্ফীতির তথ্য দিয়েছে বিবিএস। এতে বলা হচ্ছে, দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১ শতাংশ, খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশের মধ্যে রয়েছে।

এর আগে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে তত্ত্ববধায়ক সরকারের শাসনামলে ২০০৫-০৬ কে ভিত্তিবছর ধরে দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ঠেকেছিলো ১২ দশমিক ৩ শতাংশ, আর খাদ্য মূল্যস্ফীতি ঠেকেছিলো ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশে।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে পর এ প্রথম বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি এত উচ্চ পর্যায়ে ঠেকেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি ঠেকানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য বিদায়ী গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের নেওয়া কোনো দাওয়াইতেই কাজ হচ্ছে না। এমন সময় দেশের সুদহার বাড়ানো হয়েছে, যখন সিন্ডিকেট আরও বেশি সক্রিয় হয়েছে। পদত্যাগী গভর্নর সিন্ডিকেটের হয়েই কাজ করতেন। ফলে দেশের খেলাপি ঋণ বেড়ে গিয়েছিলো। ব্যাংক থেকে বেশিরভাগ নগদ অর্থ ব্যবসায়ীদের পকেটে চলে যাওয়ার পরই সুদহার বাড়িয়েছিলেন তিনি।

বিবিএসের তথ্য বলছে, জুলাই মাসে শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষের কষ্ট হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এ মাসে গ্রামের মূল্যস্ফীতি ছিলো ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ, যেখানে শহর এলাকায় গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ২৭ শতাংশে। তবে গ্রাম এলাকায় গড় মূল্যস্ফীতি বেশি থাকলেও খাদ্য মূল্যস্ফীতি শহর এলাকায় ছিলো সবচেয়ে বেশি। গ্রাম এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিলো ১৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ, যেখানে শহর এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিলো ১৪ দশমিক ২২ শতাংশ।