০৭:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে ধানের চারা ও উপকরণ বিতরণ বিনার

তরুণকণ্ঠ ডেস্ক

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

দেশে সম্প্রতিক সময়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষকের বীজতলা। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত হেক্টর জমির চারা ধান, সবজি বাগান,মাছের খামার,বসতভিটির পুকুরের নানা প্রজাতির মাছ।

সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এই বন্যায় সুবর্ণচরে ক্ষতিগ্রস্ত ১৯৭৫ হেক্টর জমির চারা ধানক্ষেত।

সুবর্ণচর কে বলা হয় নোয়াখালীর কৃষি জোন এরিয়া। এই উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ কৃষিনির্ভর। তারই ধারাবাহিকতায় সুবর্ণচরে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে উপজেলা কৃষি অফিস, বিনা,বিএডিসি,বারি’র সহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন দিনরাতে সমানতালে।

মঙ্গলবার ( ১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) কর্তৃক চরমজিদ ভূঁঞারহাহাট উপকেন্দ্রে বিনার গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরন প্রকল্পের আওতায় নোয়াখালীর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে ধানের চারা ও কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।

সুবর্ণচর বিনা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ জুয়েল সরকারের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: রায়হান শিকদার, কৃষিবিদ মো: জুবায়ের আল ইসলাম, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, বীজ উদ্যোক্তাসহ প্রমুখ।

এ সময় বিনা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ জুয়েল সরকার বলেন, বন্যার্ত এলাকা নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষীপুরের খাদ্য সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এর মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আজাদ মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক বিনা উপকেন্দ্র, নোয়াখালীর তত্ত্বাবধানে ৩৫ একর কৃষকের জমিতে রোপনের জন্য বীজতলা প্রস্তুতির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চারার বয়স ৮-১০ দিন। পানি নেমে গেলেই উচু জমিতে রোপন করা যাবে। আমরা আজ কয়েক দিন অনেকে চাহিদামত ধানের চারা বিতরণ কার্যক্রম চালু রেখেছি।

উল্লেখ্য, কৃষকের সম্প্রতি রোপণকৃত সব আমন ধান লাগাতার ভারী বর্ষণ ও বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকার কারনে নষ্ট হয়ে গেছে। বিনা উপকেন্দ্র, নোয়াখালী থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলাসমৃহে ১০.৫০ টন বীজ বিতরন করা হয়েছিল। বন্যাদূর্গত এই বৃহৎ অঞ্চলে আমন ধানই প্রধান ফসল। এই অঞ্চলের মানুষ সমস্ত বোরো ধান বিক্রি করে সারা বছরের সাংসারিক অর্থ যোগান দেয় এবং আমন ধানের চাল দিয়ে ভাত খায়।

তাই এ অঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপক খাদ্যাভাবের সম্মুখীন হবে যা জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ। বিনাধান-১৬ (জীবনকাল ১০০ দিন ও চাল মাঝারী মোটা), বিনাধান-১৭ ( জীবনকাল ১১০ দিন, চাল চিকন), বিনাধান-২০ ( জিংক ও আয়রন সমৃদ্ধ, সেপ্টম্বরের শেষ সপ্তাহ নাগাদ রোপনযোগ্য, জীবনকাল ১২০-১২৫ দিন), বিনাধান-২৩ ( দ্বৈত লবন ও পানি সহনশীল, জীবনকাল ১১৫-১২০ দিন), বিনাধান-২৬ (BLB প্রতিরোধী ও চাল মাঝারী মোটা, জীবনকাল ১১৫ দিন) জাতসমৃহের বীজতলা প্রস্তুত হচ্ছে।

উক্ত চারাসমৃহ ১৫-২০ দিন বয়সী বা সর্বোচ্চ ২৫ দিন হলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর ও চট্টগ্রামের মাধ্যমে উচু ও মধ্যম উচু জমি যেখান থেকে তাড়াতাড়ি পানি নেমে যাবে সেসব জমির জন্য বিতরন করা হবে। কৃষকদেরকে আসন্ন রবি মৌসুমের জন্য আগাম সরিষা ও সয়াবিন চাষাবাদের উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে।

আমনের চারার জন্য বীজ উদ্যোক্তা কৃষকগন আমাদের অফিসে যোগাযোগ করবেন অবশ্যই। আমরা আপরাদের সেবায় প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

প্রকাশকাল : ০৩:৩৭:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৩৩৬ Time View

নোয়াখালীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে ধানের চারা ও উপকরণ বিতরণ বিনার

প্রকাশকাল : ০৩:৩৭:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

দেশে সম্প্রতিক সময়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষকের বীজতলা। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত হেক্টর জমির চারা ধান, সবজি বাগান,মাছের খামার,বসতভিটির পুকুরের নানা প্রজাতির মাছ।

সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এই বন্যায় সুবর্ণচরে ক্ষতিগ্রস্ত ১৯৭৫ হেক্টর জমির চারা ধানক্ষেত।

সুবর্ণচর কে বলা হয় নোয়াখালীর কৃষি জোন এরিয়া। এই উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ কৃষিনির্ভর। তারই ধারাবাহিকতায় সুবর্ণচরে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে উপজেলা কৃষি অফিস, বিনা,বিএডিসি,বারি’র সহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন দিনরাতে সমানতালে।

মঙ্গলবার ( ১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) কর্তৃক চরমজিদ ভূঁঞারহাহাট উপকেন্দ্রে বিনার গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরন প্রকল্পের আওতায় নোয়াখালীর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে ধানের চারা ও কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।

সুবর্ণচর বিনা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ জুয়েল সরকারের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: রায়হান শিকদার, কৃষিবিদ মো: জুবায়ের আল ইসলাম, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, বীজ উদ্যোক্তাসহ প্রমুখ।

এ সময় বিনা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ জুয়েল সরকার বলেন, বন্যার্ত এলাকা নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষীপুরের খাদ্য সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এর মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আজাদ মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক বিনা উপকেন্দ্র, নোয়াখালীর তত্ত্বাবধানে ৩৫ একর কৃষকের জমিতে রোপনের জন্য বীজতলা প্রস্তুতির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চারার বয়স ৮-১০ দিন। পানি নেমে গেলেই উচু জমিতে রোপন করা যাবে। আমরা আজ কয়েক দিন অনেকে চাহিদামত ধানের চারা বিতরণ কার্যক্রম চালু রেখেছি।

উল্লেখ্য, কৃষকের সম্প্রতি রোপণকৃত সব আমন ধান লাগাতার ভারী বর্ষণ ও বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকার কারনে নষ্ট হয়ে গেছে। বিনা উপকেন্দ্র, নোয়াখালী থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলাসমৃহে ১০.৫০ টন বীজ বিতরন করা হয়েছিল। বন্যাদূর্গত এই বৃহৎ অঞ্চলে আমন ধানই প্রধান ফসল। এই অঞ্চলের মানুষ সমস্ত বোরো ধান বিক্রি করে সারা বছরের সাংসারিক অর্থ যোগান দেয় এবং আমন ধানের চাল দিয়ে ভাত খায়।

তাই এ অঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপক খাদ্যাভাবের সম্মুখীন হবে যা জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ। বিনাধান-১৬ (জীবনকাল ১০০ দিন ও চাল মাঝারী মোটা), বিনাধান-১৭ ( জীবনকাল ১১০ দিন, চাল চিকন), বিনাধান-২০ ( জিংক ও আয়রন সমৃদ্ধ, সেপ্টম্বরের শেষ সপ্তাহ নাগাদ রোপনযোগ্য, জীবনকাল ১২০-১২৫ দিন), বিনাধান-২৩ ( দ্বৈত লবন ও পানি সহনশীল, জীবনকাল ১১৫-১২০ দিন), বিনাধান-২৬ (BLB প্রতিরোধী ও চাল মাঝারী মোটা, জীবনকাল ১১৫ দিন) জাতসমৃহের বীজতলা প্রস্তুত হচ্ছে।

উক্ত চারাসমৃহ ১৫-২০ দিন বয়সী বা সর্বোচ্চ ২৫ দিন হলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর ও চট্টগ্রামের মাধ্যমে উচু ও মধ্যম উচু জমি যেখান থেকে তাড়াতাড়ি পানি নেমে যাবে সেসব জমির জন্য বিতরন করা হবে। কৃষকদেরকে আসন্ন রবি মৌসুমের জন্য আগাম সরিষা ও সয়াবিন চাষাবাদের উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে।

আমনের চারার জন্য বীজ উদ্যোক্তা কৃষকগন আমাদের অফিসে যোগাযোগ করবেন অবশ্যই। আমরা আপরাদের সেবায় প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।