০১:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিঙ্গাইরে নদীতে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন, হুমকিতে কৃষি জমি ও বসতবাড়ি

তরুণকণ্ঠ ডেস্ক

সিঙ্গাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি:

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে গাজীখালী নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে নদী পাড়ের শত শত বিঘা তিন ফসলি জমি ও বাড়ি ঘর হুমকিতে রয়েছে। উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের ইরতা-কলাবাগান এলাকার গাজীখালী নদীতে এক সপ্তাহ ধরে চলছে অবৈধ এ কর্মযজ্ঞ। তবে ড্রেজার মালিকরা বলছেন, একটি সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য নদী থেকে কিছু বালু ফেলা হচ্ছে। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর সংযোগ সড়ক ছাড়াও একাধিক স্থানে বালু বিক্রি করা হয়েছে। স্থানীয়রা অবৈধ ড্রেজার বন্ধে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, তালেবপুর ইউনিয়নের ইরতা-কলাবাগান এলাকার গাজীখালী নদীতে বসানো হয়েছে অবৈধ ড্রেজার মেশিন। ড্রেজারের মাধ্যমে পাইপ দিয়ে পাশের আটিমাইঠান গ্রামের মোঃ আক্কাসের একটি বিশাল পুকুর ভরাট করা হয়েছে। এছাড়া কলাবাগান গ্রামের বাদশার মাজারের পাশের কয়েকটি পুকুর ও নিচু জমি ভরাটের কাজ চলছে। এদিন সাংবাদিকদের উপস্থিত দেখে ড্রেজার মেশিনের পাইপ পাশের নির্মাণ সেতুর সংযোগ সড়ক ভরাট শুরু করে। নদীর যেখানে ড্রেজার মেশিন বসানো হয়েছে তার ২০ ফুট পাশেই রয়েছে তিন ফসলি জমি। শাখা নদীর দুই পারে শত শত বিঘা কৃষি জমি। ড্রেজার বসিয়ে যেভাবে বালু তোলা হচ্ছে যে কোন সময় ভেঙে পড়বে পাশের কৃষি জমি ও বসতবাড়ি।

 

ইরতা গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, নদীর পাশে আমার দুই বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। যেভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে যেকোনো সময় আমার জমিগুলো নদীতে ভেঙে পড়বে। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

আব্দুল আজিজ নামে এক কৃষক জানান, সেতুর সংযোগ সড়কের কথা বলে আশপাশের পুকুর ও নিচুজমিগুলো ভরাটের পাঁয়তারা চলছে। ইতিমধ্যে বালু বিক্রি করে কয়েকটি পুকুর ও নিচু জমি ভরাট করা হয়েছে। এটি বন্ধ না হলে নদীপাড়ের কৃষি জমি ও বাড়িঘর যেকোন সময় ভেঙে পড়বে।

ড্রেজার মালিক আবুল হোসেন বলেন, গাজীখালি নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুটির দুই পাশের সংযোগ সড়কের জন্য কিছু মাটি দরকার তাই ড্রেজার বসিয়ে কিছু বালু উত্তোলন করছি। রাতে আমি যখন ছিলাম না তখন কিছু বালু অন্যত্রে ফেলা হয়েছে। তবে সেতুর সংযোগ সড়কের বাইরে আর বালু ফেলা হবে না।
নদী থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি কে দিয়েছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, লিখিত কোন অনুমতি পাইনি। তবে উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জানেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার বসু বলেন, নদী থেকে বালু উত্তোলন করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এবিষয়ে অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমি এখনই খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

প্রকাশকাল : ১০:৪৯:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
২৭৮ Time View

সিঙ্গাইরে নদীতে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন, হুমকিতে কৃষি জমি ও বসতবাড়ি

প্রকাশকাল : ১০:৪৯:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সিঙ্গাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি:

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে গাজীখালী নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে নদী পাড়ের শত শত বিঘা তিন ফসলি জমি ও বাড়ি ঘর হুমকিতে রয়েছে। উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের ইরতা-কলাবাগান এলাকার গাজীখালী নদীতে এক সপ্তাহ ধরে চলছে অবৈধ এ কর্মযজ্ঞ। তবে ড্রেজার মালিকরা বলছেন, একটি সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য নদী থেকে কিছু বালু ফেলা হচ্ছে। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর সংযোগ সড়ক ছাড়াও একাধিক স্থানে বালু বিক্রি করা হয়েছে। স্থানীয়রা অবৈধ ড্রেজার বন্ধে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, তালেবপুর ইউনিয়নের ইরতা-কলাবাগান এলাকার গাজীখালী নদীতে বসানো হয়েছে অবৈধ ড্রেজার মেশিন। ড্রেজারের মাধ্যমে পাইপ দিয়ে পাশের আটিমাইঠান গ্রামের মোঃ আক্কাসের একটি বিশাল পুকুর ভরাট করা হয়েছে। এছাড়া কলাবাগান গ্রামের বাদশার মাজারের পাশের কয়েকটি পুকুর ও নিচু জমি ভরাটের কাজ চলছে। এদিন সাংবাদিকদের উপস্থিত দেখে ড্রেজার মেশিনের পাইপ পাশের নির্মাণ সেতুর সংযোগ সড়ক ভরাট শুরু করে। নদীর যেখানে ড্রেজার মেশিন বসানো হয়েছে তার ২০ ফুট পাশেই রয়েছে তিন ফসলি জমি। শাখা নদীর দুই পারে শত শত বিঘা কৃষি জমি। ড্রেজার বসিয়ে যেভাবে বালু তোলা হচ্ছে যে কোন সময় ভেঙে পড়বে পাশের কৃষি জমি ও বসতবাড়ি।

 

ইরতা গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, নদীর পাশে আমার দুই বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। যেভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে যেকোনো সময় আমার জমিগুলো নদীতে ভেঙে পড়বে। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

আব্দুল আজিজ নামে এক কৃষক জানান, সেতুর সংযোগ সড়কের কথা বলে আশপাশের পুকুর ও নিচুজমিগুলো ভরাটের পাঁয়তারা চলছে। ইতিমধ্যে বালু বিক্রি করে কয়েকটি পুকুর ও নিচু জমি ভরাট করা হয়েছে। এটি বন্ধ না হলে নদীপাড়ের কৃষি জমি ও বাড়িঘর যেকোন সময় ভেঙে পড়বে।

ড্রেজার মালিক আবুল হোসেন বলেন, গাজীখালি নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুটির দুই পাশের সংযোগ সড়কের জন্য কিছু মাটি দরকার তাই ড্রেজার বসিয়ে কিছু বালু উত্তোলন করছি। রাতে আমি যখন ছিলাম না তখন কিছু বালু অন্যত্রে ফেলা হয়েছে। তবে সেতুর সংযোগ সড়কের বাইরে আর বালু ফেলা হবে না।
নদী থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি কে দিয়েছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, লিখিত কোন অনুমতি পাইনি। তবে উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জানেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার বসু বলেন, নদী থেকে বালু উত্তোলন করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এবিষয়ে অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমি এখনই খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।