০১:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দৌলতপুরে আশ্রয়নের ঘরে কষ্টের জীবন, বাসিন্দাদের দিতে হয় ট্যাক্স

এ.বি.খান বাবু , বিশেষ প্রতিবেদক

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার জিয়নপুর ইউনিয়নের লাউতারায় ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে তৎকালীন সরকার নির্মাণ করেন জিয়নপুর আশ্রয়ন প্রকল্প। এখানে বিশাল প্লটে ৫টি সারিবদ্ধ ঘরে স্থায়ীভাবে সুযোগ পায় ভূমিহীন, বিধবা ও অসহায় অনেক পরিবার। নির্মাণের ৮ বছরেও কোন সংস্কার কাজ না হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ঘরগুলো। এই নির্মাণধিন সিআইটি ব্যারাক গুলোতে বর্তমানে মানবেতর দিন কাটাছে এখানকার পল্লীর বাসিন্দারা। অভিযোগ রয়েছে সরকারি আশ্রয়নে থাকা অসহায় বাসিন্দাদের কাছ থেকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ আদায় করে থাকেন ট্যাক্স বাবদ টাকা। টাকা নিয়ে দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদ কতৃক ঘরে-ঘরে হোল্ডিং প্লেট। উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে বিষয় গুলো জানিয়েও মিলেনে কোন প্রতিকার।

২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ৪ নং ওয়াডে লাউতারা আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণে ১০৮.৮৪৬ মে: টন গম বরাদ্দ করা হয়েছিল। এই আশ্রয়ন প্রকল্পটি ৪০.৬৯.১৯০.০০ টাকা খরচে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের প্রথমদিকের ৩ থেকে ৪ বছর দুর্ভোগে ছিলেননা বাসিন্দারা। পরবর্তী ৫ বছর পর থেকেই নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এখানকার বসবাসকারী মানুষজন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, যমুনা নদীর একাধিকবার ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাওয়া আশ্রয়ন প্রকল্পটিতে বসবাসকারী মানুষজন বর্তমানে দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করছেন। প্রচন্ড রোদে পুড়ে ঘরের চালের টিন নষ্ট হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের চালা দিয়ে ভিতর প্রবেশ করে পানি। এর মধ্য অনেক ঘরে দরজা-জানালা ভেঙে গেছে। এখানে রয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। কয়েকটি টিউবওয়েল হয়ে গেছে বিকল। পুরুষ-মহিলাদের নেই কোন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারনে অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যেন দেখার কেউ নেই!

আশ্রয়নে বসবাসকারী দিনমজুর মোঃ লাল চাঁন মন্ডল সহ কয়েকটি পরিবার জানান, আমাদের মড়ার উপর খাড়ার ঘা। একদিকে নদির পেটে আশ্রয়নের ঘর বিলীনের ঝুঁকিতে রয়েছে , ভাঙ্গন রোধে বস্তাও ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে বর্তমানে এখনের ঘর গুলো বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের চালা দিয়ে ভিতরে পানি পড়ে, তখন ঘরে থাকা দায় হয়ে পড়ে। সাথে রয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। কয়েকটি টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকের বিদ্যুৎ সংযোগ টাকার অভাবে বিছিন্ন রয়েছে। এই ব্যারাকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেক পরিবারের কষ্টের মধ্য দিয়ে দিনপাত চলছে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই এখানে থাকেননা। অপরদিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ হোল্ডিং প্লেট দিয়ে নিয়েছে টাকা। এছাড়া রশিদ দিয়ে ট্যাক্সও নিয়ে থাকেন তারা। আমাদের সরকারি ঘরে থেকে ট্যাক্স দিতে হবে কেন। এনিতেই সংসার নিয়ে টানাটানি মধ্য থাকি। ট্যাক্স নেওয়া বন্ধসহ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। আশ্রয়নের ঘরগুলো সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন বসবাসকারী পল্লীর মানুষজন।

দৌলতপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মমিনুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমলে নিয়ে লিখিত ভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

প্রকাশকাল : ০৯:৩৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
২৭৩ Time View

দৌলতপুরে আশ্রয়নের ঘরে কষ্টের জীবন, বাসিন্দাদের দিতে হয় ট্যাক্স

প্রকাশকাল : ০৯:৩৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার জিয়নপুর ইউনিয়নের লাউতারায় ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে তৎকালীন সরকার নির্মাণ করেন জিয়নপুর আশ্রয়ন প্রকল্প। এখানে বিশাল প্লটে ৫টি সারিবদ্ধ ঘরে স্থায়ীভাবে সুযোগ পায় ভূমিহীন, বিধবা ও অসহায় অনেক পরিবার। নির্মাণের ৮ বছরেও কোন সংস্কার কাজ না হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ঘরগুলো। এই নির্মাণধিন সিআইটি ব্যারাক গুলোতে বর্তমানে মানবেতর দিন কাটাছে এখানকার পল্লীর বাসিন্দারা। অভিযোগ রয়েছে সরকারি আশ্রয়নে থাকা অসহায় বাসিন্দাদের কাছ থেকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ আদায় করে থাকেন ট্যাক্স বাবদ টাকা। টাকা নিয়ে দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদ কতৃক ঘরে-ঘরে হোল্ডিং প্লেট। উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে বিষয় গুলো জানিয়েও মিলেনে কোন প্রতিকার।

২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ৪ নং ওয়াডে লাউতারা আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণে ১০৮.৮৪৬ মে: টন গম বরাদ্দ করা হয়েছিল। এই আশ্রয়ন প্রকল্পটি ৪০.৬৯.১৯০.০০ টাকা খরচে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের প্রথমদিকের ৩ থেকে ৪ বছর দুর্ভোগে ছিলেননা বাসিন্দারা। পরবর্তী ৫ বছর পর থেকেই নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এখানকার বসবাসকারী মানুষজন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, যমুনা নদীর একাধিকবার ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাওয়া আশ্রয়ন প্রকল্পটিতে বসবাসকারী মানুষজন বর্তমানে দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করছেন। প্রচন্ড রোদে পুড়ে ঘরের চালের টিন নষ্ট হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের চালা দিয়ে ভিতর প্রবেশ করে পানি। এর মধ্য অনেক ঘরে দরজা-জানালা ভেঙে গেছে। এখানে রয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। কয়েকটি টিউবওয়েল হয়ে গেছে বিকল। পুরুষ-মহিলাদের নেই কোন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারনে অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যেন দেখার কেউ নেই!

আশ্রয়নে বসবাসকারী দিনমজুর মোঃ লাল চাঁন মন্ডল সহ কয়েকটি পরিবার জানান, আমাদের মড়ার উপর খাড়ার ঘা। একদিকে নদির পেটে আশ্রয়নের ঘর বিলীনের ঝুঁকিতে রয়েছে , ভাঙ্গন রোধে বস্তাও ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে বর্তমানে এখনের ঘর গুলো বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের চালা দিয়ে ভিতরে পানি পড়ে, তখন ঘরে থাকা দায় হয়ে পড়ে। সাথে রয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। কয়েকটি টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকের বিদ্যুৎ সংযোগ টাকার অভাবে বিছিন্ন রয়েছে। এই ব্যারাকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেক পরিবারের কষ্টের মধ্য দিয়ে দিনপাত চলছে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই এখানে থাকেননা। অপরদিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ হোল্ডিং প্লেট দিয়ে নিয়েছে টাকা। এছাড়া রশিদ দিয়ে ট্যাক্সও নিয়ে থাকেন তারা। আমাদের সরকারি ঘরে থেকে ট্যাক্স দিতে হবে কেন। এনিতেই সংসার নিয়ে টানাটানি মধ্য থাকি। ট্যাক্স নেওয়া বন্ধসহ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। আশ্রয়নের ঘরগুলো সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন বসবাসকারী পল্লীর মানুষজন।

দৌলতপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মমিনুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমলে নিয়ে লিখিত ভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে।