০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাঁচ দিনের কারণ দর্শানোর নোটিশে চার বছর ক্লাসে ফিরতে পারেনি ফয়েজ

তরুণকণ্ঠ ডেস্ক

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:

“আমি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ক্লাস-পরিক্ষার অনুমতির জন্য প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে যাই। প্রশাসনের কাছে গেলে তাঁরা বলত আমার বিভাগের চেয়ারম্যানের অনুমতি পেলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। যখন চেয়ারম্যানের কাছে গেলাম তিনি বললেন, তার হাতে কিছুই নেই। ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সহায়তা প্রদান করতে পারবে কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে কোনো মামলায় আপোষ হবেনা।” এভাবেই নিজের সাথে ঘটে যাওয়া দূর্বিষহ কাহিনী তুলে ধরেন ভুক্তভোগী ফয়েজ আহমেদ।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিকভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা তুলে ধরেন ভুক্তভোগী আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ফয়েজ আহমেদ।

ফয়েজ জানায় , ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর মুহম্মদ মুমিন আদদ্বীন নামক একটি আইডি থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ নামক একটি গ্রুপে নোবিপ্রবির বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ভিপি নুরের ছবি এডিট করে পোস্ট করেন। সেই পোস্টটি সমালোচনা করে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার নাসের আবার পোস্ট করে। সেখানে আমি কমেন্ট করে বলি “এখানে দুঃসাহসের কিছু তো দেখছি না।” এই একটি কমেন্টের কারণে আমাকে জেল জুলুম খাটিয়েও বেআইনিভাবে ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

আরো জানায়, ঘটনা প্রক্কালেই কোনোপ্রকার তদন্ত ছাড়াই ঐদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর সংবাদ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার দিয়ে পাঁচদিনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কোনো প্রকার মামলা ছাড়াই আমাকে পরেরদিন গ্রেফতার করা হয়। ১৬ অক্টোবর প্রিতম আহমেদ বাদী হয়ে আমার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার মামলা দায়ের করে। দীর্ঘ চার মাস আমি কারাগারে থেকে পরবর্তীতে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে জামিন পেয়ে বের হয়ে আসি।

ফয়েজ অভিযোগ করে বলেন, আমি কারাগারে থাকা অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতা পাইনি বরং আমার পরিবারকে নানাভাবে হেনস্তা করেছে। কারাগারে থাকা অবস্থায় ১৯ অক্টোবর ২০২০ তারিখে আমার পরিবারের পক্ষ থেকে আমার বড় ভাই রাজু আহম্মদ বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের চেয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করে। কিন্তু সেই প্রত্যাহার আবেদনটি রেজিস্ট্রার বরাবর ফরওয়ার্ডিং করতে বাধা দেয় আইন বিভাগের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া। পরবর্তীতে প্রায় প্রতিদিনই আমার পরিবার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করতো কিন্তু আমার নিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ফরওয়ার্ডিং না দিয়ে উল্টো আমার পরিবারকে হেনস্তা করেছিলো।

এক পর্যায়ে ফয়েজ অশ্রুসিদ্ধ কন্ঠে বলেন, ‘আমি যখন কারাগার থেকে বের হই, ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য আমি এবং আমার পরিবার প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে যেতাম। তখন তারা বলতো তোমার বিভাগের চেয়ারম্যান অনুমতি দিলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আবার যখন চেয়ারম্যানের কাছে যেতাম তখন তিনি বলতেন আমার হাতে কিছু নেই। ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সহায়তা প্রদান করবো কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে কোনো মামলায় আপোষ হবেনা।”

এভাবে দীর্ঘ চার বছর নানাভাবে চেষ্টা করেও আজ পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারি নাই। আমার সহপাঠীরা যখন ক্লাস করত তখন আমি চেয়ারম্যানের অফিসে বসে বসে চোখের পানি ফেলতাম। আমার বাবা একজন আলেম মানুষ, আমার ভাই শিক্ষক। তারা আমার পরিবারকে দিনের পর দিন লাঞ্চিত করত। আইন বিভাগের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া আমার পরিবারকে নানাভাবে হেনস্তা করেছে। আজকে পড়ালেখা করার কোনো ইচ্ছে আমার নেই। মিথ্যা মামলা এবং হয়রানির কারণে ঋণে জর্জরিত হয়ে আমার পরিবার আজ নিঃস্ব হয়ে গেছে। আমি এর বিচার চাই। নোবিপ্রবি প্রশাসন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আমার সাথে এবং আমার পরিবারের সাথে ঘটা অন্যায়ের বিচার চাই।

সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ৬ সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, অধ্যাপক বিপ্লব মল্লিক, তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান রিমন, অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ, আফসানা মৌসুমি এবং এ কিউ এম সালাউদ্দিন পাঠান। ভুক্তভোগী ফয়েজের ভাষ্য মতে, সঠিকভাবে পর্যালোচনা না করে তদন্ত কমিটি তাকে দোষী সাব্যস্ত করে।

ফয়েজ তার সাথে করা অন্যায়ের বিচার চেয়ে বলেন, আমার সাথে অন্যায়ের বিচার চাই। নোবিপ্রবি প্রশাসন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আমার সাথে এবং আমার পরিবারের সাথে ঘটা অন্যায়ের বিচার চাই।

এছাড়াও মামলার সাক্ষীরা হলেন, শাহরিয়ার নাসের, আব্দুল্লাহ আল মামুন সাব্বির, আজাহারুল হক সজীব।

ভুক্তভোগী ফয়েজ আহমেদের বড় ভাই রাজু আহমেদ বলেন, ‘একটা মিথ্যা এবং বানোয়াট বিষয়ে আমার ভাইয়ের জীবনটা তারা নষ্ট করে দিয়েছে। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিচার হলেও সে ক্লাস পরীক্ষায় ফিরতে পারে নি। দীর্ঘ তিন বছর অমানুষিক কষ্ট করেছি আমরা। শত চেষ্টা করেও নোবিপ্রবিতে পড়ালেখা চলমান না করতে পেরে আমরা তাকে বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যারা এর জন্য দায়ী আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের বিচার চাই। বিশেষ করে যারা তদন্ত কমিটিতে ছিলো তারাও এর জন্য দায়ী। তারা কোনো প্রকার তদন্ত না করেই ফয়েজকে সাময়িক বহিষ্কার দিয়েছে এবং পরবর্তীতে এই বিষয়ে আর কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে নি। তারা আওয়ামী দোসরদের পক্ষ হয়ে কাজ করেছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আইন বিভাগের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া বলেন,’ আমার উপর আনিত অভিযোগ সত্য নয়। প্রথমত বহিষ্কার করা এবং ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড এবং একাডেমিক কাউন্সিলের হাতে। সেখানে চেয়ারম্যান হিসেবে ওর ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছি আমি। কিন্তু মামলা চলায় একাডেমিক কাউন্সিল তা আমলে নেয়নি। এর বাহিরে ওর পরিবারের সাথে আমি কখনো খারাপ ব্যবহার করিনি।

ধর্ষণ মামলার আসামী হলেও আমি বিবেচনা করবো কিন্তু বঙ্গবন্ধু বা আওয়ামীলীগের বিষয়ে কোনো আপোষ নেই” এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। ৫ আগস্টের পর সেনাবাহিনীর দায়িত্বরত অফিসার দিয়ে ফয়েজকে তুলে নেওয়া হবে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাদশা মিয়া বলেন, উল্টো ভুক্তোভোগী তাকে মারার হুমকি দিয়েছে এমন পরিস্থিতিতে তিনি নিরাপত্তা নিতে সেনাবাহিনীর হেল্পলাইনে অভিযোগ জানিয়েছেন।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক শিক্ষা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক বিপ্লব মল্লিক বলেন, ‘এতদিন আগের ঘটনা এখন মনে পড়ছে না। এর বাহিরে কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।’

Please Share This Post in Your Social Media

প্রকাশকাল : ০৪:৫১:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৩০৯ Time View

পাঁচ দিনের কারণ দর্শানোর নোটিশে চার বছর ক্লাসে ফিরতে পারেনি ফয়েজ

প্রকাশকাল : ০৪:৫১:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:

“আমি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ক্লাস-পরিক্ষার অনুমতির জন্য প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে যাই। প্রশাসনের কাছে গেলে তাঁরা বলত আমার বিভাগের চেয়ারম্যানের অনুমতি পেলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। যখন চেয়ারম্যানের কাছে গেলাম তিনি বললেন, তার হাতে কিছুই নেই। ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সহায়তা প্রদান করতে পারবে কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে কোনো মামলায় আপোষ হবেনা।” এভাবেই নিজের সাথে ঘটে যাওয়া দূর্বিষহ কাহিনী তুলে ধরেন ভুক্তভোগী ফয়েজ আহমেদ।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিকভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা তুলে ধরেন ভুক্তভোগী আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ফয়েজ আহমেদ।

ফয়েজ জানায় , ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর মুহম্মদ মুমিন আদদ্বীন নামক একটি আইডি থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ নামক একটি গ্রুপে নোবিপ্রবির বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ভিপি নুরের ছবি এডিট করে পোস্ট করেন। সেই পোস্টটি সমালোচনা করে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার নাসের আবার পোস্ট করে। সেখানে আমি কমেন্ট করে বলি “এখানে দুঃসাহসের কিছু তো দেখছি না।” এই একটি কমেন্টের কারণে আমাকে জেল জুলুম খাটিয়েও বেআইনিভাবে ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

আরো জানায়, ঘটনা প্রক্কালেই কোনোপ্রকার তদন্ত ছাড়াই ঐদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর সংবাদ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার দিয়ে পাঁচদিনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কোনো প্রকার মামলা ছাড়াই আমাকে পরেরদিন গ্রেফতার করা হয়। ১৬ অক্টোবর প্রিতম আহমেদ বাদী হয়ে আমার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার মামলা দায়ের করে। দীর্ঘ চার মাস আমি কারাগারে থেকে পরবর্তীতে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে জামিন পেয়ে বের হয়ে আসি।

ফয়েজ অভিযোগ করে বলেন, আমি কারাগারে থাকা অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতা পাইনি বরং আমার পরিবারকে নানাভাবে হেনস্তা করেছে। কারাগারে থাকা অবস্থায় ১৯ অক্টোবর ২০২০ তারিখে আমার পরিবারের পক্ষ থেকে আমার বড় ভাই রাজু আহম্মদ বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের চেয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করে। কিন্তু সেই প্রত্যাহার আবেদনটি রেজিস্ট্রার বরাবর ফরওয়ার্ডিং করতে বাধা দেয় আইন বিভাগের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া। পরবর্তীতে প্রায় প্রতিদিনই আমার পরিবার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করতো কিন্তু আমার নিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ফরওয়ার্ডিং না দিয়ে উল্টো আমার পরিবারকে হেনস্তা করেছিলো।

এক পর্যায়ে ফয়েজ অশ্রুসিদ্ধ কন্ঠে বলেন, ‘আমি যখন কারাগার থেকে বের হই, ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য আমি এবং আমার পরিবার প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে যেতাম। তখন তারা বলতো তোমার বিভাগের চেয়ারম্যান অনুমতি দিলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আবার যখন চেয়ারম্যানের কাছে যেতাম তখন তিনি বলতেন আমার হাতে কিছু নেই। ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সহায়তা প্রদান করবো কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে কোনো মামলায় আপোষ হবেনা।”

এভাবে দীর্ঘ চার বছর নানাভাবে চেষ্টা করেও আজ পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারি নাই। আমার সহপাঠীরা যখন ক্লাস করত তখন আমি চেয়ারম্যানের অফিসে বসে বসে চোখের পানি ফেলতাম। আমার বাবা একজন আলেম মানুষ, আমার ভাই শিক্ষক। তারা আমার পরিবারকে দিনের পর দিন লাঞ্চিত করত। আইন বিভাগের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া আমার পরিবারকে নানাভাবে হেনস্তা করেছে। আজকে পড়ালেখা করার কোনো ইচ্ছে আমার নেই। মিথ্যা মামলা এবং হয়রানির কারণে ঋণে জর্জরিত হয়ে আমার পরিবার আজ নিঃস্ব হয়ে গেছে। আমি এর বিচার চাই। নোবিপ্রবি প্রশাসন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আমার সাথে এবং আমার পরিবারের সাথে ঘটা অন্যায়ের বিচার চাই।

সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ৬ সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, অধ্যাপক বিপ্লব মল্লিক, তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান রিমন, অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ, আফসানা মৌসুমি এবং এ কিউ এম সালাউদ্দিন পাঠান। ভুক্তভোগী ফয়েজের ভাষ্য মতে, সঠিকভাবে পর্যালোচনা না করে তদন্ত কমিটি তাকে দোষী সাব্যস্ত করে।

ফয়েজ তার সাথে করা অন্যায়ের বিচার চেয়ে বলেন, আমার সাথে অন্যায়ের বিচার চাই। নোবিপ্রবি প্রশাসন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আমার সাথে এবং আমার পরিবারের সাথে ঘটা অন্যায়ের বিচার চাই।

এছাড়াও মামলার সাক্ষীরা হলেন, শাহরিয়ার নাসের, আব্দুল্লাহ আল মামুন সাব্বির, আজাহারুল হক সজীব।

ভুক্তভোগী ফয়েজ আহমেদের বড় ভাই রাজু আহমেদ বলেন, ‘একটা মিথ্যা এবং বানোয়াট বিষয়ে আমার ভাইয়ের জীবনটা তারা নষ্ট করে দিয়েছে। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিচার হলেও সে ক্লাস পরীক্ষায় ফিরতে পারে নি। দীর্ঘ তিন বছর অমানুষিক কষ্ট করেছি আমরা। শত চেষ্টা করেও নোবিপ্রবিতে পড়ালেখা চলমান না করতে পেরে আমরা তাকে বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যারা এর জন্য দায়ী আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের বিচার চাই। বিশেষ করে যারা তদন্ত কমিটিতে ছিলো তারাও এর জন্য দায়ী। তারা কোনো প্রকার তদন্ত না করেই ফয়েজকে সাময়িক বহিষ্কার দিয়েছে এবং পরবর্তীতে এই বিষয়ে আর কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে নি। তারা আওয়ামী দোসরদের পক্ষ হয়ে কাজ করেছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আইন বিভাগের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া বলেন,’ আমার উপর আনিত অভিযোগ সত্য নয়। প্রথমত বহিষ্কার করা এবং ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড এবং একাডেমিক কাউন্সিলের হাতে। সেখানে চেয়ারম্যান হিসেবে ওর ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছি আমি। কিন্তু মামলা চলায় একাডেমিক কাউন্সিল তা আমলে নেয়নি। এর বাহিরে ওর পরিবারের সাথে আমি কখনো খারাপ ব্যবহার করিনি।

ধর্ষণ মামলার আসামী হলেও আমি বিবেচনা করবো কিন্তু বঙ্গবন্ধু বা আওয়ামীলীগের বিষয়ে কোনো আপোষ নেই” এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। ৫ আগস্টের পর সেনাবাহিনীর দায়িত্বরত অফিসার দিয়ে ফয়েজকে তুলে নেওয়া হবে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাদশা মিয়া বলেন, উল্টো ভুক্তোভোগী তাকে মারার হুমকি দিয়েছে এমন পরিস্থিতিতে তিনি নিরাপত্তা নিতে সেনাবাহিনীর হেল্পলাইনে অভিযোগ জানিয়েছেন।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক শিক্ষা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক বিপ্লব মল্লিক বলেন, ‘এতদিন আগের ঘটনা এখন মনে পড়ছে না। এর বাহিরে কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।’